বিদেশে শ্রমবাজার পুনরুদ্ধারে জোর প্রচেষ্টা প্রয়োজন

বিদেশে শ্রমবাজার পুনরুদ্ধারে জোর প্রচেষ্টা প্রয়োজন

(লিখেছেনঃ জাকের হোসেন সুমন, ফতেহপুর, সেনবাগ, নোয়াখালী।) 

খবর,আজকের খবর,বিএনপির খবর,সব খবর,আন্তর্জাতিক খবর,সব খবর একসাথে,একনজরে বিশ্বের আলোচিত সব খবর,সব খবর jamuna tv,সব খবর যমুনা টিভি,আন্তর্জাতিক সব খবর,বিশ্বের আলোচিত খবর,সারাদিনের সব খবর একসাথে,সব খবর একসাথে যমুনা টিভি,দেশের খবর,দিনভর বিয়ের খবর ভাইরাল,সারাদিনের সব খবর একসাথে jamuna tv,সারাদিনের সব খবর একসাথে sob khobor,দেশের খবর লাইভ,দেশের খবর আজকের,যমুনা টিভি আজকের খবর,আন্তর্জাতিক খবর আজকের,দেশের খবর আজকের তাজা খবর 2024,দক্ষিণ কোরিয়া
প্রতীকী ছবি। (এই ছবি টি https://www.jugantor.com/ থেকে নেওয়া) 


প্রিয় পাঠক, আজকে আমি বাংলাদেশের একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়া আলোচনা করবো। 

২০২৪ সালে রেকর্ড পরিমাণ প্রবাসী আয় বেড়েছে—এটা নিশ্চয়ই আমাদের সকলের জন্য আনন্দের কথা। বিশেষ কইরা এদেশে যখন তীব্র ডলার–সংকটের সময়। গত ২০২৩ সালে প্রবাসী আয় এসেছে ২ হাজার ৬৭০ কোটি ডলার। এর আগে ২০২১ সালে সর্বোচ্চ ২ হাজার ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছিল। কিন্তু এইটার সঙ্গে বিদেশে কর্মী পাঠানোর যে পরিসংখ্যান সেটা মেলালে আমরা পুরোপুরি হতাশ হই। 

বিভিন্ন পত্রপত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিদেশে শ্রমিক পাঠানো কমার কারণ বড় আকারের তিনটি শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে যাওয়া। বাজারগুলো হলো মালয়েশিয়া, ওমান আর সংযুক্ত আরব আমিরাত। এখন অবশ্য সৌদি আরবে শ্রমিক পাঠানোর সংখ্যা বাড়তেছে। বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, ২০২১ সালে বিভিন্ন দেশে কাজ নিয়ে গেছেন ৬ লাখ ১৭ হাজার কর্মী। পরের বছর এই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় ১১ লাখের বেশি। ২০২৩ সালে তা আরও ২ লাখ বেড়ে কর্মী সংখ্যা ১৩ লাখ ছাড়িয়ে যায়। যদিও গত বছর তা ৩ লাখ কমে দাঁড়ায় ১০ লাখে। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ কর্মী গেছেন মাত্র ৫টি দেশে। এগুলো হচ্ছে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। 

২০২৩ সালে মালয়েশিয়ায় কাজ নিয়ে যায় সাড়ে তিন লাখের বেশি কর্মী। কিন্তু গত জুন ২০২৪ ইং থেকে দেশটির শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে গেছে। গত বছর দেশটিতে সব মিলে কর্মী যেতে পেরেছেন এক লাখের কম। ওমানে ২০২৩ সালে কর্মী গিয়েছে সোয়া লাখের বেশি। কিন্তু গত বছর সেখানে শ্রমবাজার বন্ধ থাকায় কর্মী গেছেন মাত্র ৩৫৮ জন। আমিরাতে ২০২৩ সালে কর্মী গিয়েছিলেন প্রায় এক লাখ। কিন্তু গত বছর দেশটিতে কর্মী গেছেন ৪৭ হাজার।  

বিদেশে জনশক্তি প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কেলেঙ্কারির কারণে দীর্ঘদিন পর চালু হওয়া মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার চলতি বছর আবার বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি সেখানে যাওয়ার জন্য যাঁরা নিবন্ধিত হয়েছিলেন, তাঁদেরও সবাই যেতে পারেননি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকায় এলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাঁকে সমস্যাটি জানানো হয়। কিন্তু এরপর এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়েছে বলে জানা নেই কিংবা কোনো কিছু চোখেও পড়ে না।  

বাংলাদেশের কর্মীদের জন্য যেসব দেশের শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে গেছে, ওইসব দেশ কিন্তু কর্মী নেওয়া পুরোপুরি বন্ধ করেনি। জনশক্তি প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম–দুর্নীতির কারণেই ওই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশি কর্মীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। তবে চক্র গঠনের অভিযোগে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার সব দেশের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। 
বর্তমানে প্রবাসী আয় বাড়ার অর্থ এই নয় যে ভবিষ্যতেও এটা অব্যাহত থাকবে। প্রতিবছরই আগে পাঠানো শ্রমিকদের একটা অংশ দেশে ফিরে চলে আসে। ফলে ফেরত আসাদের শূন্যস্থান পূরণ না করা গেলে প্রবাসী আয়ও অনেক কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।    

তিনটি বড় দেশের শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সৌদি আরবই এখন আমাদের একমাত্র ভরসা। ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ায় সৌদি আরবে অবকাঠামো নির্মাণ শ্রমিকের চাহিদা বাড়বে আশা করা যায়। এ সুযোগ কাজে লাগানোর পাশাপাশি ওমান, মালয়েশিয়া ও আরব আমিরাতের বাজার পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাতে হবে। এ ক্ষেত্রে জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টার বিকল্প নেই। 
অনেকদিন ধরে বিদেশে শ্রমবাজার বহুমুখী করার আওয়াজ দেওয়া হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। নতুন বাজার খোঁজার তেমন উদ্যোগও লক্ষ করা যাচ্ছে না। যাঁদের কারণে শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানোর মাধ্যমে হারানো শ্রমবাজার পুনরুদ্ধার করতে হবে। আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে কার্যকর ও টেকসই ব্যবস্থা নিতে কার্পণ্য করবে না।

পাশাপাশি যারা ইতিমধ্যে বিদেশে আছেন, তারাও সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রচেষ্ঠা নিলে দেশের ভাবমূর্তি বাড়বে এবং অন্যান্য দেশে বাংলাদেশী কর্মীর চাহিদা তুলনামূলক ভাবে বাড়বে আশা করি। 


Post a Comment

0 Comments
* কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এই সাইটে কোন লেখা প্রকাশ করা হয়না।